বিদেশী মদের বোতলে রেক্টিফাইড স্পিরিট মিশানোর মাষ্টার মাইন্ড সুমনসহ গ্রেফতার-৪

বিদেশী মদের বোতলে রেক্টিফাইড স্পিরিট মিশানোর মাষ্টার মাইন্ড সুমনসহ গ্রেফতার-৪

বিদেশী মদের বোতলে রেক্টিফাইড স্পিরিট মিশানোর মাষ্টার মাইন্ড সুমনসহ গ্রেফতার-৪
বিদেশী মদের বোতলে রেক্টিফাইড স্পিরিট মিশানোর মাষ্টার মাইন্ড সুমনসহ গ্রেফতার-৪

এসএম বিশাল: রাজশাহী নগরীতে অতিরিক্ত লাভের আশায় বিদেশী মদের বোতলে রেক্টিফাইড স্পিরিট মিশানোর মাষ্টার মাইন্ড সুমনসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

থার্টিফাস্ট নাইটে বিদেশী মদের সাথে রেক্টিফাইড স্পিরিটসহ অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে বিক্রি করেছিলেন বিক্রেতারা। সেই মদ পানের কারণেই রাজশাহীতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন তথ্য দিয়েছে পুলিশ ।

মৃত্যু ব্যক্তিরা হলেন- নগরীর হোসনীগঞ্জ এলাকার ছাত্রদল নেতা ফয়সাল হোসেন (২৮), জেলার বাগমারা উপজেলার শান্তাপাড়া এলাকার সজল (২৫), নগরীর বাকির মোড় এলাকার সাগর (২৫), হেতমখাঁ এলাকার তুহিন (২৬), কাদিরগঞ্জ এলাকার মুন আহমেদ (১৮) এবং দড়িখড়বোনা এলাকার ইশাকুল ইসলাম (২২)।

মদপানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নারীসহ এখনও কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের কাছে মদ বিক্রির অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন – নগরীর বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়া এলাকার পবিত্র সিংয়ের ছেলে পরিমল সিং (৬০), একই পরিতোষ সিংয়ের ছেলে বাপ্পা সিং (২৮), সাগরপাড়া বল্লভগঞ্জ এলাকার হাসেম আলীর ছেলে সাজু (৩০) এবং রাজপাড়া থানার সিপাইপাড়া এলাকার আব্দুর রউফ ওরফে মতিনের ছেলে মাষ্টার মাইন্ড ইফতেখার হোসেন ওরফে সুমন (৫০)।

জানাগেছে, রাজশাহী নগরীতে কেরু কম্পানীর ডিলার ডিকে বসাকের মদ বিক্রির সাথে জড়িত সুমন। এ ক্ষেত্রে সুমনের কাছে কাষ্টমারের চাপও থাকে বেশি। তাও আবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মাতাল না হলে অনুষ্ঠান মানায়না এমন ধারনা যুবসমাজের। তাই সে রাতে পাড়ায় পাড়ায় বন্ধুদের নিয়ে পিকনিক করা আর মদপান করা ছিলো তাদের বিশেষ প্রয়োজন। এদিকে সুমন এ বিশেষ দিনে কেরু কম্পানীর মদের পাশাপাশি বিদেশী মদের বোতল ভাংড়ি পট্টি থেকে সংগ্রহ করে বেশি লাভের আশায় ফন্দি আটে এ টুইনিং মদ তৈরি করার।  চোরের ১০ দিন আর গৃহস্থের একদিন। অবশেষে মিশ্রিত এ বিশাক্ত মদ পান করে ঝড়ে গেলো ছয়টি তাজা প্রাণ। কে নিবে এর দায়? এমন প্রশ্ন নগরবাসীর মুখে মুখে।

এদের কাছ থেকে তিনটি কাঁচের তৈরি মদের খালি বোতল, টু্ইনিং মদ (মিশ্রিত মদ) তৈরির তরল পদার্থ ভর্তি একটি প্লাস্টিকের তৈরি বোতল, তেতুলের বিচি ভর্তি একিট কাঁচের বোতল, কমলা রঙের ৫০ গ্রাম গুড়ো রঙ, ২৯টি টিন ও প্লাস্টিকের তৈরি কর্ক, ১১টি কর্কের নিব, ৫০টি কর্কের প্রটেকশন এবং এ্যালকোহল ভর্তি দুটি প্লাস্টিকের সাদা বোতল উদ্ধার হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, নগরীর বিভিন্ন থানা ও গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের সমন্বয়ে অবৈধ মদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এর মধ্যে বোয়ালিয়া মডেল থানার একটি দল মৃত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজন এবং চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এছাড়া গোপন সংবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে অভিযান পরিচালনা করে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, তারা অতিরিক্ত লাভের আশায় বিদেশী মদের সাথে রেক্টিফাইড স্পিরিটসহ অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে এক বোতলকে একাধিক বোতলে পরিণত করেছিলেন। এই অবৈধ মিশ্রিত মদ মৃত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছে বিক্রি করেছিলেন। অসুস্থ ব্যক্তিদেরকে গ্রেফতার ব্যক্তিদের ছবি দেখানো হলে তারাও এদেরকে মদ বিক্রেতা হিসেবে সনাক্ত করেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে (বোয়ালিয়া মডেল থানার মামলা নং-০৪, তাং-০৩/০১/২০২১।

তিনি আরও বলেনজড়িত সকলকে গ্রেফতার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। এই অবৈধ মদের উৎস সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করার জন্য কঠোর অভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মতিহার বার্তা ডট কম- ০৪ জানুয়ারী ২০২১

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply